ঢাকা মহানগরীর তুরাগ থানা এলাকায় যৌতুকের টাকা দাবি করে গৃহবধূকে শারীরিক নির্যাতন ও জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আছিয়া আক্তার ঝিনুক (২০) তুরাগ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই আছিয়া আক্তার ঝিনুকের স্বামী মো. জলিল মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময় যৌতুকের নামে টাকা-পয়সা দাবি করে আসছিলেন। অভিযোগকারী জানান, তাদের বিয়ের পর থেকে ধাপে ধাপে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা দিতে তাকে বাধ্য করা হয়। এমনকি প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন কিনে দিতেও বাধ্য করা হয় তাকে।
ঝিনুক অভিযোগে আরও বলেন, তিনি গর্ভবতী থাকাকালীনও স্বামীর নির্যাতন থেকে রেহাই পাননি। সর্বশেষ ১৪ নভেম্বর ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্বামী জলিল মিয়া পুনরায় ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে অসম্মতি জানালে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাকে মারধর করে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম হয়।
জানা গেছে, অভিযুক্ত ট্রাফিক ইনস্পেক্টর (টিআই) জলিল মিয়া বর্তমানে ধউর ট্রাফিক পুলিশ বক্স, ট্রাফিক পশ্চিম জোন, উত্তরা ট্রাফিক বিভাগ, ডিএমপি–তে কর্মরত।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে টিআই জলিল মিয়া বলেন—আমি তাকে নোটিশ পাঠিয়েছি, বিষয়টি আদালত দেখবে। আমাকে অভিযোগ দিয়ে কিছুই করতে পারবে না, কারণ আমি আইনের লোক।”
অপরদিকে, ধারাবাহিক নির্যাতনে আছিয়া আক্তার ঝিনুকের শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় আত্মীয়স্বজনের পরামর্শে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবং নিজের ও অনাগত সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনগত সহায়তা চান।
এ বিষয়ে তুরাগ মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই অপূর্ব বলেন—জলিল স্যার আমাদের উপরস্থ কর্মকর্তা। তাকে এভাবে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারি না। তদন্তের মাধ্যমে সব জানা যাবে।
তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন—
“অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনা বিষয়ে উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের ডিসি–র সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন—আমি বিষয়টি অবগত নই। যদি এমন অভিযোগ সত্যি হয়ে থাকে, তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১৯ নভেম্বর ২০২৫

আপনার মতামত লিখুন