মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
ওপেন নিউজ ২৪

কক্সবাজার কটেজ জোনে সোর্স গিয়াস উদ্দিন 'র ত্রাস। ইয়াবা কারবারিদের ‘সেফ গার্ড’ যখন পুলিশের তথ্যদাতা।

কক্সবাজার কটেজ জোনে সোর্স গিয়াস উদ্দিন 'র ত্রাস।   ইয়াবা কারবারিদের ‘সেফ গার্ড’ যখন পুলিশের তথ্যদাতা।
কক্সবাজার কটেজ জোনে সোর্স গিয়াস উদ্দিন 'র ত্রাস। ইয়াবা কারবারিদের ‘সেফ গার্ড’ যখন পুলিশের তথ্যদাতা।


নিজস্ব প্রতিবেদন

​বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের কোল ঘেঁষে অবস্থিত কক্সবাজার শহরের লাইট হাউস কটেজ জোন। পর্যটকদের জন্য তৈরি এই জোনটি এখন স্থানীয়দের কাছে এক আতঙ্কের নাম। আর এই আতঙ্কের মূলে রয়েছে পুলিশের কথিত ‘সোর্স’ গিয়াস। পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, ওয়ারেন্ট নিয়ে বাণিজ্য এবং চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিদের অর্থের বিনিময়ে সুরক্ষা (শেল্টার) দেওয়ার এক বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে এই গিয়াস।

​অনুসন্ধানে জানা গেছে, লাইট হাউস ও সংলগ্ন এলাকায় কারও নামে আদালতের ওয়ারেন্ট আসলে তা পুলিশের আগে পৌঁছে যায় গিয়াসের কাছে। এরপরই শুরু হয় তার ‘হায়েনা’ রূপ। সম্প্রতি এক ব্যক্তির নামে ওয়ারেন্ট আসার পর গিয়াস তার বাড়িতে গিয়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে পুলিশ ধরবে না, আর না দিলে আজই হাজতবাস—এমন হুমকির মুখে অসহায় পরিবারগুলো ভিটেমাটি বন্ধক রেখে গিয়াসের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, টাকা পাওয়ার পর গিয়াস উদ্দিন  ওই আসামিকে পুলিশের নজর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় অথবা থানার অসাধু চক্রকে ম্যানেজ করার মিথ্যা আশ্বাস দেয়।

​ইয়াবা কারবারিদের নিরাপদ আশ্রয়দাতা

​লাইট হাউস এলাকার একাধিক কটেজ এখন ইয়াবা সেবন ও বিক্রির নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চিহ্নিত কয়েকজন ইয়াবা কারবারি গিয়াসকে নিয়মিত মাসোয়ারা প্রদান করে। বিনিময়ে গিয়াস উদ্দিন  তাদের পুলিশের অভিযানের আগাম তথ্য দিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, কোনো মাদক কারবারি পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাদের ছাড়িয়ে নিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও পালন করে এই গিয়াস উদ্দিন । ফলে কটেজ জোনে মাদক নির্মূল অভিযান বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।

​লাইট হাউস জোনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং কটেজ মালিকরা গিয়াস উদ্দিন'র অত্যাচারে অতিষ্ঠ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কটেজ মালিক জানান,

​গিয়াস উদ্দিন  নিজেকে পুলিশের ডান হাত হিসেবে পরিচয় দেয়। প্রতি মাসে তাকে নির্দিষ্ট অংকের চাঁদা না দিলে কটেজে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয় সে। তার বেপরোয়া আচরণের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি।

​একজন সাধারণ সোর্স হয়ে গিয়াস কীভাবে এত বেপরোয়া হয়ে উঠল, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন। স্থানীয়দের অভিযোগ, থানা পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সাথে গিয়াসের গভীর সখ্যতা রয়েছে। পুলিশের গাড়িতে চড়ে তাকে এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়, যা সাধারণ মানুষের মনে ভীতির সৃষ্টি করে। এই সুযোগটিকেই গিয়াস তার চাঁদাবাজির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ​লাইট হাউস এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা বলছেন, গিয়াস এখন শুধু সোর্স নয়, সে নিজেই একটি অপরাধের সাম্রাজ্য। তার হাতে পর্যটন এলাকার নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। ইয়াবা কারবারিদের সাথে তার এই প্রকাশ্য আঁতাত কক্সবাজারের মাদকবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।​এ বিষয়ে কক্সবাজার মডেল থানার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা জানান, পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি বা অপরাধ করার কোনো সুযোগ নেই। গিয়াস নামের কেউ যদি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

​অনুসন্ধান চলবে...

আপনার মতামত লিখুন

ওপেন নিউজ ২৪

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫


কক্সবাজার কটেজ জোনে সোর্স গিয়াস উদ্দিন 'র ত্রাস। ইয়াবা কারবারিদের ‘সেফ গার্ড’ যখন পুলিশের তথ্যদাতা।

প্রকাশের তারিখ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

featured Image
নিজস্ব প্রতিবেদন​বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের কোল ঘেঁষে অবস্থিত কক্সবাজার শহরের লাইট হাউস কটেজ জোন। পর্যটকদের জন্য তৈরি এই জোনটি এখন স্থানীয়দের কাছে এক আতঙ্কের নাম। আর এই আতঙ্কের মূলে রয়েছে পুলিশের কথিত ‘সোর্স’ গিয়াস। পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, ওয়ারেন্ট নিয়ে বাণিজ্য এবং চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিদের অর্থের বিনিময়ে সুরক্ষা (শেল্টার) দেওয়ার এক বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে এই গিয়াস।​অনুসন্ধানে জানা গেছে, লাইট হাউস ও সংলগ্ন এলাকায় কারও নামে আদালতের ওয়ারেন্ট আসলে তা পুলিশের আগে পৌঁছে যায় গিয়াসের কাছে। এরপরই শুরু হয় তার ‘হায়েনা’ রূপ। সম্প্রতি এক ব্যক্তির নামে ওয়ারেন্ট আসার পর গিয়াস তার বাড়িতে গিয়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে পুলিশ ধরবে না, আর না দিলে আজই হাজতবাস—এমন হুমকির মুখে অসহায় পরিবারগুলো ভিটেমাটি বন্ধক রেখে গিয়াসের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, টাকা পাওয়ার পর গিয়াস উদ্দিন  ওই আসামিকে পুলিশের নজর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় অথবা থানার অসাধু চক্রকে ম্যানেজ করার মিথ্যা আশ্বাস দেয়।​ইয়াবা কারবারিদের নিরাপদ আশ্রয়দাতা​লাইট হাউস এলাকার একাধিক কটেজ এখন ইয়াবা সেবন ও বিক্রির নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চিহ্নিত কয়েকজন ইয়াবা কারবারি গিয়াসকে নিয়মিত মাসোয়ারা প্রদান করে। বিনিময়ে গিয়াস উদ্দিন  তাদের পুলিশের অভিযানের আগাম তথ্য দিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, কোনো মাদক কারবারি পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাদের ছাড়িয়ে নিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকাও পালন করে এই গিয়াস উদ্দিন । ফলে কটেজ জোনে মাদক নির্মূল অভিযান বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।​​লাইট হাউস জোনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং কটেজ মালিকরা গিয়াস উদ্দিন'র অত্যাচারে অতিষ্ঠ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কটেজ মালিক জানান,​গিয়াস উদ্দিন  নিজেকে পুলিশের ডান হাত হিসেবে পরিচয় দেয়। প্রতি মাসে তাকে নির্দিষ্ট অংকের চাঁদা না দিলে কটেজে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেয় সে। তার বেপরোয়া আচরণের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি।​একজন সাধারণ সোর্স হয়ে গিয়াস কীভাবে এত বেপরোয়া হয়ে উঠল, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন। স্থানীয়দের অভিযোগ, থানা পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সাথে গিয়াসের গভীর সখ্যতা রয়েছে। পুলিশের গাড়িতে চড়ে তাকে এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়, যা সাধারণ মানুষের মনে ভীতির সৃষ্টি করে। এই সুযোগটিকেই গিয়াস তার চাঁদাবাজির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ​লাইট হাউস এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা বলছেন, গিয়াস এখন শুধু সোর্স নয়, সে নিজেই একটি অপরাধের সাম্রাজ্য। তার হাতে পর্যটন এলাকার নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। ইয়াবা কারবারিদের সাথে তার এই প্রকাশ্য আঁতাত কক্সবাজারের মাদকবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।​এ বিষয়ে কক্সবাজার মডেল থানার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা জানান, পুলিশের সোর্স পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি বা অপরাধ করার কোনো সুযোগ নেই। গিয়াস নামের কেউ যদি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি করে, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।​অনুসন্ধান চলবে...

ওপেন নিউজ ২৪

সম্পাদক ও প্রকাশক ঃ মোস্তফা কামাল 

কপিরাইট © ২০২৫ ওপেন নিউজ ২৪ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত