পীরগাছায় গ্রেপ্তার এড়াতে আ.লীগ নেতাদের বিএনপিতে যোগদান, রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
পীরগাছা কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
রংপুরের পীরগাছায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অভিযান চললেও একাধিক নেতাকে বিএনপিতে পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে। এই দ্বিমুখী অবস্থানকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানের কথা বলা হলেও পীরগাছায় সেই নির্দেশনার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। বরং সুযোগসন্ধানী আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী রাজনৈতিক বাস্তবতা পরিবর্তনের সুযোগে বিএনপিতে যোগদানের চেষ্টা করছেন বলে তারা দাবি করছেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিএনপিতে ভেড়ানোর অভিযোগ উঠেছে পীরগাছা উপজেলা বিএনপির বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সোমবার(২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পীরগাছা উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা ফুলের মালা পরিয়ে বিএনপিতে যোগদান করান উপজেলা যুবলীগের সদস্য সোহাগ মিয়া ও শাকিল মিয়াকে। এ সময় আরও যোগ দেন পীরগাছা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, যিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। এছাড়া পীরগাছা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য আকবার আলী, নুরুল হক ও মনজিলসহ কয়েকজন।
বিএনপি নেতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের একসঙ্গে থাকা ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের নজরে আসে। এরপরই বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং দলীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।সোমবার সন্ধ্যায় পীরগাছা উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম রবি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। অল্প সময়ের মধ্যেই সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।এ বিষয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন মতামত দেন দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকের।এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পীরগাছা উপজেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগের বিচারাধীন সময়ে আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন কোনভাবেই কাম্য নয়। শুধুমাত্র দলের রাজনৈতিক সুবিধার্তে আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন করা অপ্রত্যাশিত।'রংপুর জেলা জামায়াতের মানবসম্পদ বিভাগের সভাপতি আব্দুল মোত্তালেব বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য সরকার যখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তা রকরছে ঠিক সেই মুহুর্তে বিএনপি তাদেরকে দলে নিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। এটি জুলাই চেতনার সাথে বেইমানি। জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে এর জবাব দিবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে পীরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা বলেন, ‘আমি দলীয় স্বার্থ বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আওয়ামী লীগের নিম্ন শ্রেণির কয়েকজনকে দলে নিয়েছি। কোন বড় পদধারীকে দলে নেয়া হয়নি।

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

আপনার মতামত লিখুন