আমন ধান কাটা প্রায় শেষ। তবুও মনে আতঙ্ক, হাতি মামা কবে এসে বাড়িঘর তছনছ করে দেয়। বাড়িতে সারা বছরের জন্য তুলে রাখা ধান গুলো খেয়ে যায়। খাবার না পেলে ভেঙ্গে চুরে সব গুড়িয়ে দিয়ে যায়। এই আতঙ্কে প্রায় সারারাত বসে থাকতে হয়। এমনই আতঙ্কে আছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজলোর ১নং কুল্লাগড়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পাহাড়ঘেঁষা বিজয়পুর, আড়াপাড়া, কমলাবাড়ী গ্রামসহ আশপাশে গ্রামের আদিবাসী মানুষ গুলো।
হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে আলো জালিয়ে, ঘন্টা বাজিয়ে, বড় করে হুইসেল বাজিয়ে, বড় টর্চলাইট জালিয়ে রাখতে পারলে হাতি কিছুটা ভয় পেয়ে দুরে সরে যায়। তখন এ বাড়ি থেকে ও বাড়িতে ডাকার জন্য মাইক বা হ্যান্ডমাইক হলে সুবিধা হয়। ওইসময় বড় টর্চলাইট ও হ্যান্ড মাইক খুবই গুরুত্বপুর্ন। আদিবাসীদের এই দুর্দশার কথা ভেবে, হাতির আক্রমণ থেকে আদিবাসীদের বাঁচাতে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সীমান্তবর্তী বিজয়পুর গ্রামে বেশকয়েকটি হ্যান্ডমাইক ও বড় টর্চলাইট উপহার দিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি‘র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
বিজয়পুর গ্রামের আদিবাসী কৃষক সত্য মানখিন বলেন, রাত নামলেই আতঙ্কে দিন কাটে গ্রামের মানুষের। ফসল নষ্ট, বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানির শঙ্কা নিয়ে নির্ঘুম রাত পার করতে হয় আমাদের। এই গুরুতর সমস্যাটি অনেক সময়ই অবহেলিত থেকে যায়। এই সমস্যা নিয়ে কেউ কোনদিন কথাও বলে না। ডমিনিক রুরাম, রিমিসন রিছিল ও ভিরু রুরাম সহ অনেকেই হাতির আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্থ্য। এই বাস্তবতা গভীরভাবে উপলব্ধি করে আবারও মানবিক ও দায়ত্বিশীল নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করলনে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আমরা উনার প্রতি কৃতজ্ঞ।
এ নিয়ে অন্য আদিবাসী কৃষক জনেন চিচাম বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর বিজয়পুর গ্রাম পরিদর্শনে আসেন আমাদের মানবিক নেতা ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এ সময় তিনি গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলেন এবং তাঁদের নানা সমস্যা, অভাব-অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শোনেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও জীবন-জীবিকা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন গ্রামবাসী। আলোচনার একর্পযায়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বর্পূণ বিষয় বন্য হাতির আক্রমণ গ্রামবাসী উল্লেখ করতে ভুলে গেলেও এই মানবিক নেতা তুলে ধরেন। পরবর্তিতে আমাদের কথা ভেবে, নিজ অর্থায়নে কিনে আজকে এই সরঞ্জান গুলো আমাদের বাড়িতে দলীয় নেতাকর্মী দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। পিতা ঈশ^র এমন মানবিক নেতাকে, আমাদের মতো অবহেলিত মানুষের সেবা করতে বাঁচিয়ে রাখুন।
বিজয়পুর আদিবাসী গ্রামপ্রধান সিলভেস্টার রিছিল ব্যারস্টিার কায়সার কামালের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তিনি শুধু রাজনীতি করনে না, মানুষরে জীবন-জীবিকার কথাও ভাবেন। আমাদের সমস্যাকে নিজরে সমস্যা মনে করে যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা আমরা কখনো ভুলবো না। বিজয়পুর গ্রামের এই উদ্যোগ আবারও প্রমাণ করলো তিনি এক মানবিক নেতা, আগামী নির্বাচনে এমন মানবিক নেতাকেই আমরা এমপি নির্বাচিত করবো।
উপজেলা বিএনপি‘র সহ-সভাপতি ডক্টর অঞ্জন কুমার চিচাম বলেন, আমাদের নেতা বলেন ‘আমরা কথায় নয়- কাজে বিশ^াসী। মানুষের পাশে থেকে, মানুষের কথা শুনে, মানুষের সমস্যার বাস্তব সমাধান করে দিয়ে এভাবেই ব্যারিস্টার কায়সার কামাল নিজেকে গণমানুষের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছেন। আজকে বিজয়পুর গ্রামের আদিবাসীদের কথা ভেবে, হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে যে উদ্যোগ তিনি নিলেন, এটি শুধু একটি উপহার নয় বরং এটি একজন জননেতার দায়িত্বশীলতা, দূরদর্শীতা ও মানবিকতার বাস্তব প্রমাণ। এসময়, কুল্লাগড়া ইউনিয়ন বিএনপি‘র সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ আদিবাসী গ্রামপ্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

আপনার মতামত লিখুন