যাদের জন্য সেতু নির্মাণ, সেই ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের হাতে উদ্বোধন; উপকৃত হবে ৬ গ্রামের হাজারো মানুষ,
নেত্রকোণার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা এলাকার জনজীবনে দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় সমস্যা ছিল “বৈঠাখালি মঙ্গল শরি” নদী পারাপার। নদীতে সারা বছর পানি থাকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হতো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কৃষক, নারী ও সাধারণ পথচারীদের। সরকারি উদ্যোগের অভাবে বহু বছর ধরে এলাকা ছিল অবহেলিত। আর সেই দুর্ভোগের মধ্যেই স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত হলো ১০৫ ফুট দীর্ঘ কাঠ-বাঁশের সেতু—যা নির্মাণ করে দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
২৯/১১২০২৫ ইং নাজিরপুর কৃষক সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখতে পান—স্কুলের শ’খানেক ছাত্র-ছাত্রী এবং কয়েকজন শিক্ষক নদীর পাড়ে অসহায়ভাবে অপেক্ষা করছেন। তিনি গাড়ি থামিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান এবং জানতে চান সমস্যার কারণ।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল কে জানান, স্যার, প্রতিদিনই এই নদী পার হতে গিয়ে আমরা বহু কষ্ট করি। বর্ষায় নৌকা না পেলে স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকে। গ্রামবাসীর জন্যও নদী পার হওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
এই কথাগুলো তাঁকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নেন—এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। ব্যারিস্টার কায়সার কামালের নির্দেশনা ও আশ্বাসে স্থানীয় জনগণ, ছাত্রদের অভিভাবক, যুবসমাজ এবং দলীয় কর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে আসেন। মাত্র একদিনের প্রস্তুতির পরই শুরু হয় সেতু নির্মাণ। ৬ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে শুরু হওয়া এই কাজটি দিনে-রাতে অব্যাহত থাকে।
নির্মিত সেতুর বৈশিষ্ট্য—দৈর্ঘ্য: ১০৫ ফুট ,প্রস্থ: ৫ ফুট কাঠ ও বাঁশের সমন্বয়ে মজবুতভাবে তৈরি বর্ষাকালসহ সারা বছর ব্যবহারযোগ্য করে নকশা করা
স্থানীয় প্রবীণ নাগরিকদের মতে, “বিগত ৩০ বছরে এমন কাজ কেউ দেখেনি। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত, এত দ্রুত কাজ—এটি এলাকার মানুষের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”
১০ ডিসেম্বর: আবেগঘন উদ্বোধন ,মাত্র চার দিনের প্রচেষ্টায় সেতুটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে। এরপর ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, সেতুটির উদ্বোধনে ছিল অনন্য একটি দৃশ্য—কোনো রাজনৈতিক নেতা বা অতিথি নয়, সেতুটি উদ্বোধন করেন সেই শিশু-কিশোর, শিক্ষক এবং গ্রামবাসী, যাদের দৈনন্দিন জীবনের কষ্ট লাঘবের জন্যই এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
উদ্বোধনী মুহূর্তে উপস্থিত লোকজন বলেন,
“এটি শুধু একটি সেতু নয়—এটি আমাদের বাঁচার স্বস্তি, আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা।”৬ গ্রামের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব
নতুন সেতুটি চালু হওয়ায় উপকৃত হবে—২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী,পার্শ্ববর্তী জামে মসজিদের অসংখ্য মুসল্লি,কৃষক, দিনমজুর, কর্মজীবী মানুষ,এবং মোট ৬টি গ্রামের সাধারণ মানুষ,
যাদের প্রতিদিনের যাতায়াত সহজ ও নিরাপদ হয়েছে।
স্থানীয় নারীরা জানান, হাসপাতাল, বাজার ও স্কুলে যেতে আর আগের মতো দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগে প্রশংসা জানিয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন—মানুষের সমস্যা শুনে চুপ থাকা আমাদের কাজ নয়। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি কারণ মানুষের কষ্ট সহ্য হয় না। উন্নয়ন ও মানবসেবা—এই দুটি বিষয়ই আমার অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন,জনগণ সহযোগিতা করলে আরও অনেক এলাকায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এলাকার জনপ্রিয় মহল এবং প্রবীণদের মন্তব্য—ব্যারিস্টার কায়সার কামাল দেখিয়ে দিলেন—উদ্যোগ চাই, কাজ করা সম্ভব। এটি মানুষকে সম্মান দেওয়ার নজির। আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা আজ নিশ্চিত হলো।
দুর্গাপুর–কলমাকান্দা অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সক্রিয় ভূমিকা মানুষের মধ্যে নতুন আস্থা সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসা সহায়তা, রাস্তা-মেরামত, সেতু নির্মাণ, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো—সব ক্ষেত্রেই তাঁর কার্যক্রম জনমনে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে।
এই কাঠের সেতু তাই শুধু একটি স্থাপনা নয়—এটি জনকল্যাণমুখী রাজনীতির জীবন্ত উদাহরণ।

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

আপনার মতামত লিখুন