ওপেন নিউজ ২৪

সারাদেশ

গাজীপুরে কারাগারে ‘প্রক্সি আসামি’ নিয়ে তদন্ত, বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন

গাজীপুর জেলা কারাগারে একজন প্রকৃত আসামির পরিবর্তে সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তিকে আটকের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় আদালত থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন প্রশ্ন। কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া বন রেঞ্জ এলাকায় গত ৯ সেপ্টেম্বর সরকারি বন থেকে গাছ কাটার সময় কয়েকজনকে আটক করে বন বিভাগ। স্থানীয়দের চাপের মুখে তারা পরে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করে মামলা দায়ের করেন। এই মামলার প্রধান আসামি সাত্তার মিয়া। গত ৭ ডিসেম্বর আদালতে হাজিরা দেন সাত্তার মিয়া বলে পরিচিত এক ব্যক্তি। বিচারক তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। তবে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আদালতে হাজিরা দেওয়া ও বর্তমানে কারাগারে আটক ব্যক্তির প্রকৃত নাম সাইফুল ইসলাম। আর প্রকৃত আসামি সাত্তার মিয়া তার গ্রামের বাড়িতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের বলেন, আসামিকে কারাগারে নেওয়ার সময় তিনি নিজেকে সাত্তার বলে দাবি করেন। পরে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শনাক্ত করে দেখা যায় তিনি সাত্তার নন, সাইফুল। এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করা হয়েছে। সাইফুল ইসলামের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আসামি সাত্তারের পক্ষ থেকে জামিনের আশ্বাসে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সাইফুল আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন। সাইফুলের বাবা রহিম বাদশা বলেন, তার ছেলে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। টাকার লোভে তিনি এই কাজ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। বন কোর্টের সহকারী বন মামলা পরিচালক নূর মোহাম্মদ জানান, আদালতে হাজিরার সময় বন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা জানতেন হাজির হওয়া ব্যক্তি প্রকৃত আসামি নন। তবে আসামি পক্ষের আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় হাজিরা দাতাকেই কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আদালতের পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর ভূমিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। গাজীপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসে এ ধরনের প্রক্সি হাজিরা দিয়ে কারাভোগের তিনটি ঘটনা শনাক্ত হয়েছে।  বর্তমানে কারাগার কর্তৃপক্ষের চিঠির ভিত্তিতে আদালত এই ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে।

গাজীপুরে কারাগারে ‘প্রক্সি আসামি’ নিয়ে তদন্ত, বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন