মো:আমিনুল ইসলাম ||
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বাংলা বাজার টসার মোড় এলাকার মানিকের ছেলে মাইদুল ইসলামকে ঘিরে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক পরিচয়ের সুযোগ নিয়ে তিনি নামে,বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন।অভিযোগে জানা যায়, মাইদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্সবিহীন একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। এসব ব্যবসার মধ্যে বিড়ি, গুল ও জর্দা উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগও রয়েছে। আরও গুরুতর অভিযোগ হলো,জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে এসব পণ্য বাজারজাত করার মাধ্যমে তিনি সরকারকে দীর্ঘদিন ধরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এর ফলে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।স্থানীয় সূত্রের দাবি, তার একটি ব্যবসার বৈধ লাইসেন্স থাকলেও সেই লাইসেন্সের আড়ালে তিনি অবৈধভাবে একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে জাল ব্যান্ডরোলের ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছে।স্থানীয়দের দাবি, সরকারের আমলে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সুবাদে তিনি এসব কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এই অবৈধ আয়ের অর্থেই তিনি একটি বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, ওই বাড়ির গেট নির্মাণেই ব্যয় হয়েছে লক্ষাধিক টাকা এবং পুরো বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে কোটি টাকারও বেশি।এছাড়া এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাইদুল ইসলামের চলাফেরায় রয়েছে ব্যাপক বিলাসিতা। তার ব্যবহৃত বিলাসবহুল বাড়ি ও একটি কালো রঙের দামি গাড়ি এলাকায় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, তার জীবনযাপন ও চলাফেরার ধরন দেখে অনেকের মনে প্রশ্নের জন্ম নিচ্ছে,এত আয়ের উৎস কোথা থেকে আসছে?এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিবেদক মাইদুল ইসলামের বাড়িতে গেলে গেটে থাকা দারোয়ান জানান, বাড়ির ভেতরে প্রবেশ নিষেধ এবং বাড়ির মালিক বর্তমানে বাড়িতে নেই।এলাকাবাসীর প্রশ্ন,একজন সাধারণ পরিবারের সন্তান হয়ে কীভাবে এত বিপুল সম্পদের মালিক হলেন মাইদুল ইসলাম? তার আয়ের বৈধ উৎস কী তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, গত ২৪শে জুলাই ও আগস্টে ছাত্র,জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত হামলায় অর্থের যোগানদাতা ও হামলার নির্দেশদাতাদের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ওই ঘটনায় তিনি প্রধান সারির অর্থদাতা হিসেবে জড়িত ছিলেন। পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।এ বিষয়ে মাইদুল ইসলামের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সচেতন মহল এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।