নাঈম ||
গাজীপুর সদর উপজেলা একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত, মারধর এবং নারী শ্রমিকদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করায় এলাকায় যানজট তৈরি হয়। বিক্ষোভের পর কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে।গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা (মেম্বারবাড়ী) এলাকায় জায়ান্ট গ্রুপের জায়ান্ট টেক্সটাইলস লিমিটেড কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ বিনা কারণে শ্রমিক চাকরিচ্যুত করেন এবং নারী শ্রমিকদের সাথে অশালীন আচরণ ও মারধর করেন। এসব অভিযোগের প্রতিবাদে সোমবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে জমায়েত হন এবং পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। তারা অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের অপসারণ ও নির্যাতনের বিচারের দাবি তোলেন।পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের সাথে আলোচনার আশ্বাস দিলে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা যানজট অবস্থা থাকার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।নির্যাতনের শিকার এক নারী শ্রমিক জুঁই আক্তার বলেন, কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কয়েকজন সদস্য দীর্ঘদিন ধরে নারী কর্মীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন। শনিবার সকালে এই আচরণের প্রতিবাদ করায় ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সোহেল রানা ও এজিএম কাউসারসহ ৩০-৪০ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে শ্রমিকদের মারধর করেন। তিনি আরও দাবি করেন যে, সোহেল রানা ও কাউসার এক নারী শ্রমিকের জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলে অশালীন আচরণ করে। আহত শ্রমিকদের গাজীপুর টিএজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়।বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের গাজীপুর জেলা নেতৃবৃন্দও মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে শ্রমিক মারধর ও নারী নিপীড়নের অভিযোগ নিশ্চিত করেন।অভিযোগ অস্বীকার করে কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সোহেল রানা বলেন, শ্রমিকরা অযৌক্তিক দাবি তুলছে এবং কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে চেষ্টা করছে।অন্য একজন ব্যবস্থাপক আনেয়ারুল হক রিপন দাবি করেন, তাদের কারখানা শতভাগ কমপ্লায়েন্স মেনে চলে এবং কোনও শ্রমিককে গালিগালাজ করা হয় না। তিনি অভিযোগ করেন যে, এক শ্রমিককে পুনরায় নিয়োগের দাবিতে তার সমর্থকরা কারখানার কর্মকর্তাদের মারধর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৩(১) ধারা অনুসারে রবিবার থেকে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ (লে-অফ) ঘোষণা করা হয়েছে।বর্তমানে কারখানার সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কারখানা পুনরায় চালু করা হবে।