নাঈম ||
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা।একটি মর্মস্পর্শী ও নিন্দনীয় ঘটনার অভিযোগ উঠেছে গাজীপুরের শ্রীপুরে। স্থানীয় এক স্বামী নিজের স্ত্রীকে জোরপূর্বক যৌন ব্যবসায় বাধ্য করতে চাওয়ার অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এছাড়া, স্ত্রীর অমানবিক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে জানা গেছে।বিবাদিত স্বামী কামাল হোসেন (৪০) এর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। ঘটনাটি গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামে সংঘটিত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে।ভুক্তভোগী কিশোরী স্ত্রী রিয়া মনি (১৬) ২৯ সেপ্টেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় শ্রীপুর থানায়। তার বক্তব্য অনুযায়ী, তার মা-বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি সৎমা মর্জিনার তত্ত্বাবধানে বড় হন। প্রায় এক বছর আগে, পারিবারিক সিদ্ধান্তে শ্রীপুর উপজেলার সাইটালিয়া গ্রামের মাদকাসক্ত কামাল হোসেনের সাথে তার বিয়ে হয়। রিয়া মনির দাবি, তার সৎমা মর্জিনা ও স্থানীয় মোজাম্মেল মিলে জোরপূর্বক এই বিয়ে দেন। আরও উল্লেখ্য, কামালের আগে থেকেই অন্য একটি সংসারে স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে।বিয়ের পর থেকেই কামাল হোসেন নিয়মিতভাবে টাকার জন্য রিয়া মনিকে মারধর করতেন বলে অভিযোগ। এই ধারাবাহিকতায়, ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে কামাল তার বাসায় চারজন অপরিচিত পুরুষকে নিয়ে আসেন এবং রিয়াকে তাদের সাথে দেহসম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করতে চান। রিয়া মনির, ওই চারজন পুরুষ দাবি করে যে কামাল তাদের কাছ থেকে মাদক দ্রব্য (ইয়াবা) কেনার জন্য টাকা গ্রহণ করেছেন এবং এর বিনিময়ে স্ত্রীর সাথে তাদের শারীরিক সম্পর্কের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।রিয়া মনির বক্তব্য অনুসারে, ওই চার ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়, কিন্তু তিনি জোর দিয়ে চিৎকার শুরু করলে তারা সে স্থান থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বামী কামাল হোসেনের সাথে আলাপকালে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে নেন এবং রিয়াকে মারধর শুরু করেন। এ সময় সিগারেটের জ্বলন্ত অংশ দিয়ে রিয়া মনির হাত ও পায়ে পোড়ানোসহ নৃশংস শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর, রিয়া মনি কোনওভাবে স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজের পৈতৃক বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং পরবর্তীতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।এ সংক্রান্ত ঘটনায় অভিযুক্ত কামাল হোসেনকে বাড়িতে খুঁজে না পাওয়ার খবর রয়েছে।শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বারিক ঘটনাটির স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, একটি লিখিত অভিযোগ গৃহীত হয়েছে এবং বর্তমানে বিষয়টি সূক্ষ্ম তদন্তাধীন। প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।