নিজস্ব প্রতিবেদন ||
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় এক কিশোরী ধর্ষণের প্রতিবাদে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’র ডাকা অবরোধের তৃতীয় দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এছাড়া সেনাবাহিনীর এক মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুইমারার রামেসু বাজারে এ ঘটনা ঘটে।সংঘর্ষের পর বাজার এলাকায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় বেশ কয়েকটি দোকান, বসতঘর এবং মোটরসাইকেল পুড়ে যায়।খাগড়াছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাবেরও তিনজনের মৃত্যু ও ১০ জনের আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।কীভাবে সংঘর্ষ ঘটলস্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর ১টার দিকে অবরোধকারীরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে সিন্দুকছড়ি সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মাজহার হোসেন রাব্বানীসহ সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের সরে যেতে বলেন। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে।এ সময় সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা হলে মেজরসহ ১৩ সেনাসদস্য আহত হন। গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরীসহ তিন পুলিশ সদস্য এবং স্থানীয় সাংবাদিক সাইফুর রহমানসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।প্রত্যক্ষদর্শীর দাবিস্থানীয় বাসিন্দা মংসাজাই মারমা ও কংজরী মারমা জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে খাদ্যগুদামের সামনে প্রতিবাদ করছিলেন। তাদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালালে লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এরপর ২০-২৫ জন মুখোশধারী বাজার ও বসতবাড়ি লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেয়।পটভূমিগত মঙ্গলবার রাতে প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে এক পাহাড়ি কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার ভোর থেকে ‘জুম্ম-ছাত্র জনতা’ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে। জেলা প্রশাসন খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে, যা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
ঘটনার পর থেকে পুরো খাগড়াছড়ি জেলাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শহরের মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।